দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে লকডাউন এবং অচলাবস্থার কারণে বহুমাত্রিক সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব দেখা দিতে পারে বাংলাদেশেও। কেননা, এই সংকটে চাকরি হারানো প্রবাসী ছাড়াও অবৈধভাবে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক কর্মীর দেশে ফেরার আশঙ্কা করছে সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো ঠেকাতে এখন থেকেই আন্তর্জাতিক ফোরামে দাবি তোলা দরকার। সেই সঙ্গে নিয়োগকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে আর্থিক প্রণোদনা আদায় এবং দেশে ফেরা কর্মীদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের পরামর্শ তাদের।
বিশ্বের প্রায় ১৭০ দেশে প্রায় সোয়া কোটি বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অভিবাসীদের অধিকাংশই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী দেশে ফিরতে বাধ্য হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।এরই মধ্যে কুয়েত, বাহরাইন মালদ্বীপসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশি কর্মী ফেরত আনার তাগিদ দিয়েছে সেসব দেশের সরকার। যদিও এ বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথার জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অধিকাংশই কর্মহীন হয়ে পড়বে। বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
সংকটকালে প্রবাসীদের ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মীদের ফেরত পাঠাতে চাইলে নিয়োগকর্তা ও সে দেশের সরকারের কাছ থেকে আর্থিক প্রণোদনাসহ সুযোগ সুবিধা আদায়ের ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে।রামরু প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, যেকোনো সংকটে যে দেশে অভিবাসীরা থাকবেন আর যদি তিনি নিয়মিত বা অনিয়মিত হন তার ভরণপোষণের দায়িত্ব গ্রহণকারীর দেশের। কর্মীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে জোর দাবি তুলতে হবে।
অধিবাসী বিশেষজ্ঞ সুমাইয়া ইসলাম বলেন, প্রবাসীরা রাষ্ট্রের উন্নতি করেছে। প্রতি মাসে তারা রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশকে উন্নত করেছে। তাহলে যেসব শ্রমিককে দেশে পাঠানো হচ্ছে অবশ্যই সেই দেশের সরকারকে আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে পাঠাতে হবে।এই দুঃসময়ে বিদেশে বৈধতা হারানো কর্মীদের সংকট কাটাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি, ফিরে আসা কর্মীদের জন্য তহবিল গঠন ও তাদের আবার পাঠাতে যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
অধিবাসী বিশেষজ্ঞ সুমাইয়া ইসলাম বলেন, বিদেশে অবস্থানরত অনেক নারী শ্রমিক আছেন যারা অনিবন্ধিত। তাদের নিরাপত্তা ও কীভাবে চলবে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।রামরু প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, সরকারের নিজস্ব বাজেট থেকে তহবিল গঠন করতে হবে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার।
বিদেশে অবস্থানরত নারী কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেরও তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দৈনিক প্রত্যয়/ জাহিরুল মিলন